নিজস্ব সংবাদদাতা:র্যাব-৬ খুলনার স্পেশাল কোম্পানির একটি চৌকশ আভিযানিক দলের অভিযানে ভূয়া সিআইডি পরিচয়ে ধর্ষণ, হত্যা চেষ্টা ও টাকা-স্বর্নলংকার লুটকারী চক্রের ৩সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে পুলিশের ভুয়া আইডি কার্ড ভিকটিমের স্বর্নের চেইন, কানের দুল গলিয়ে তৈরীকৃত স্বর্নের বার ১টি, নাকফুল ১টি, ১টি মনিটর, ১টি স্ক্যানার, ১টি সিপিইউ, ১টি প্রিন্টার, ১টি কি-বোর্ড, ১টি মাউস, ৩টি মোবাইল ও নগদ ৫০ হাজার টাকা উদ্বার পূর্বক জব্দ করা হয়। আজ শনিবার র্যাব-৬’র অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মুহাম্মাদ মোসতাক আহমদ প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন র্যাব-৬’র স্পেশাল কোম্পানী কমান্ডার মেজর রিফাত বিন আসাদ ও লেঃ কমান্ডার মোঃ সরোয়ার হোসাইন।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- মোঃ শরিফুল ইসলাম (২৮) নিজেকে একজন বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর পুলিশ কর্মকর্তা (এএসআই) পরিচয় দেয়। তিনি সিআইডি ঢাকায় কর্মরত আছেন বলেও পরিচয় দেয়। সে বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলার আরাজি মালি পাটন ৮নং ওয়ার্ডের হাবিবুর রহমান শেখের ছেলে। এছাড়া তার সহযোগি একই উপজেলার প্রতাপপুর এলাকার রনজিৎ কুমার শীলের পুত্র অশোক কুমার শীল(৩৫) ও মোড়লগঞ্জ উপজেলার রনজিৎ কুন্ডর পুত্র গৌতম কুমার কুন্ড(৩৬)। অভিযুক্ত মোঃ শরিফুল ইসলাম (২৮) এ পর্যন্ত প্রতারনা করে ৪টি বিবাহ করেছেন বলে র্যাবের প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-৬’র স্পেশাল কোম্পানী কমান্ডার মেজর রিফাত। গ্রেফতারকৃতদের বাগেরহাটের সদর থানায় হস্তান্তর ও পরবর্তি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের প্রক্রীয়া নেয়া হচ্ছে বলেও র্যাব সুত্র জানায়।
র্যাব সুত্র জানায়, গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে জানতে পারে, গত ২৩ নভেম্বর ভিকটিমের সাথে আভিযুক্ত মোঃ শরিফুল ইসলাম (২৮) সু-কৌশলে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পরিচয় স্থাপন করে। ভিকটিমকে মোবাইল ফোনে আভিযুক্ত মোঃ শরিফুল ইসলাম (২৮) নিজেকে একজন বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর পুলিশ কর্মকর্তা (এএসআই) পরিচয় দেয়। তিনি সিআইডি ঢাকায় কর্মরত আছেন। ভিকটিমের সাথে আভিযুক্ত শরিফুল ইসলাম(২৮) এর ঘনিষ্টতা বৃদ্ধি পাওয়ার এক পর্যায়ে আভিযুক্ত মোঃ শরিফুল ইসলাম গ্রহনযোগ্যতা ও বিশ্বস্ততা বাড়ানোর জন্য অভিযুক্ত গৌতম কুমার কুন্ড(৩৬) এর সহায়তায় ভূয়া পুলিশ আইডি কার্ড তৈরী করে ভিকটিমকে দেখায়। যাতে ভিকটিমের বিশ্বাস আরো দৃঢ় হয়।
সহযোগী গৌতম কুমার কুন্ড(৩৬) এর কম্পিউটারের দোকানে বিভিন্ন ধরনের ভূয়া আইডিকার্ড ও সার্টিফিকেট জাল জালিয়াতি করেন। গত ২৭নভেম্বর অভিযুক্ত মোঃ শরিফুল ইসলাম ভিকটিমকে বিবাহের প্রস্তাব দিলে ভিকটিম তার পরিবারের সাথে আলোচনা করে অভিযুক্ত মোঃ শরিফুল ইসলামের প্রস্তাবে রাজি হয়। গত ১ডিসেম্বর মোঃ শরিফুল ইসলাম সু-কৌশলে ভিকটিমকে বাগেরহাট কোটের সামনে একটি খাবার হোটেলে বসিয়ে রেখে একটি স্ট্যাম্প এনে সাদা কাগজে সই নিয়ে বিয়ের প্রতারনা করে। ভিকটিম ও অভিযুক্ত মোঃ শরিফুল ইসলাম ভিকটিমের বাবার বাড়ীতে স্বামী- স্ত্রী রুপে বসবাস করে। গত ৪ ডিসেম্বর রাত অনুমান ১০টার দিকে মোঃ শরিফুল ইসলাম ভিকটিমকে ম্যাংগো জুসের সাথে ঘুমের ওষুধ খাওয়ায়ে অচেতন করে চলে যায়। পরবর্তীতে ভিকটিম ও তার পরিবার দেখতে পায় স্টীলের বাক্সে থাকা ভিকটিমের স্বর্নালংকার ও নগদ টাকা পয়সা নিয়ে চলে গেছে। এ ঘটনার অভিযোগ পেয়ে র্যাব-৬ স্পেশাল কোম্পানি খুলনার একটি চৌকশ আভিযানিক দল ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।