ডেস্ক রিপোর্ট: শিশু রায়ানকে চিরবিদায় জানিয়েছে মরক্কোবাসী। সোমবার জানাজা শেষে নিজগ্রামে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
গত মঙ্গলবার রায়ানের পিতা বাড়ির কাছে একটি কুয়া মেরামতের কাজ করছিলেন। তখন সে হঠাৎ ১০৪ ফুট গভীরে পড়ে যায়। সেদিন সন্ধ্যা থেকেই দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় ছোট শহর তামরতে উদ্ধার অভিযান শুরু করা হয়।
কুয়াটির ভেতর বালু ও পাথর থাকায় ধসের আশঙ্কায় অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছিল। উদ্ধার অভিযানের সময় হাজার হাজার মানুষ সেখানে ভিড় করেছিলেন। সারা দেশবাসী তার জন্য প্রার্থনা করছিল, অনলাইনেও এই উদ্ধার কর্মকাণ্ডের দিকে নজর রেখেছিলেন লাখ লাখ মানুষ। পাঁচ দিন উদ্ধার অভিযান শেষে উদ্ধারকারী তাকে উদ্ধার করেন। কিন্তু ততক্ষণে শিশু রায়ান মৃত।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, শিশু রায়ানকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে শত শত মানুষ জড়ো হয়। তারা পাহাড়ি রাস্তায় দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেন।
একজন গ্রামবাসী বলেন, আমার বয়স ৫০ বছর এবং কোনো জানাজায় আমি এত মানুষ দেখিনি। শিশু রায়ান আমাদের সবার সন্তান।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, গ্রামে লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। পুরো গ্রাম থেকে কবরস্থান পর্যন্ত পা ফেলার জায়গা ছিল না। শিশু রায়ানের বাড়ি সামনে আগুন্তুকদের জন্য বড় দুটি তাঁবু টানানো হয়।
আরেকজন গ্রামবাসী বলেন, রায়ানের মৃত্যু মানবতার প্রতি বিশ্বাসে নতুনত্ব দিয়েছে। কারণ হিসেবে তিনি বিশ্বের নানা প্রান্তের মানুষের একাত্মতা ও শোক প্রকাশকে উল্লেখ করেন।
শিশু রায়ানের মৃত্যুতে শনিবার মরক্কোর বাদশা ৬ষ্ঠ মোহাম্মদ, পোপ ফ্রান্সিস, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাখোঁ , দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিনা রশিদ আল মাখতুম শোক প্রকাশ করেন।
আফ্রিকান কাপের ফাইনাল ম্যাচে মিশর এবং সেনেগালের খেলোয়াড়রা খেলা শুরুর পূর্বে এক মিনিট নিরবতা পালন করেন।
উদ্ধারকারীরা বিরতিহীনভাবে শিশু রায়ানকে উদ্ধারে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শিশু রায়ানকে তারা জীবিত উদ্ধার করতে পারেননি।
উদ্ধার কাজে অংশ নেওয়া অন্যতম স্বেচ্ছাসেবী আলী শাহরো বলেন, আমরা তার কাছে পৌঁছাতে চেষ্টার কমতি রাখিনি। পুরো পাঁচদিন ২৪ ঘণ্টা ধরেই আমরা খনন করছি। কিন্তু পারিনি, আমি দুঃখিত! এ সময় তার দু’চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ে।