প্রতিদিন ডেস্ক: রাজধানীর বনানীতে রেইনট্রি হোটেলে দুই শিক্ষার্থী ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলার রায় ঘোষণাকালে পর্যবেক্ষণে আদালত ৭২ ঘণ্টা পরে মামলা না নিতে যে পরামর্শ দিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক বেগম কামরুন্নাহারের আদালত এ রায় দেন। আসামিদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বিচারক তাদের খালাস দেন। রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, ‘মামলার দুই ভিকটিম বিশ্বাসযোগ্য নয়। ভিকটিম দুজনই আগে থেকেই সেক্সুয়াল কাজে অভ্যস্ত, হাসপাতাল রিপোর্ট তাই বলে। অহেতুক তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রভাবিত হয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছেন। এতে আদালতের ৯৪ কার্যদিবস নষ্ট হয়েছে। এরপর থেকে পুলিশকে এ বিষয় সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছি। এছাড়া এখন থেকে ধর্ষণের ৭২ ঘণ্টা পর যদি কেউ মামলা করতে যায়, তা না নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি।’
অন্যদিকে বেশ কিছু মামলা পর্যালোচনায় দেখা যায়, জমি-জমা বিরোধ, অর্থ লেনদেন এবং স্থানীয় দ্বন্দের কারনে প্রতিপক্ষকে ঘায়েলে ব্যবহার হচ্ছে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন অাইন। এতে করে মামলা গুলো এক সময় গিয়ে মিথ্যা প্রমানিত হচ্ছে, অপরদিকে আদালেত বাড়ছে মামলার ঝট।
গত ৯ নভেম্বর বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান ধর্ষণের অভিযোগের মামলা মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় মামলার বাদী আসমা বেগম (২৬) কে ৫ বছরের কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন। বাদি আসমা বেগমের উপস্থিতিতে আদালত এ রায় দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এ রায় একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। মিথ্যা ও বানোয়াট নারী নির্যাতন-ধর্ষণ মামলা যারা করেন তাদের জন্য এটি সতর্কীকরণ। পুর্ব শত্রুতার জেরে মামলাটি দায়ের করা হয়েছিেলা বলে আইনজীবী জানান।
গত বৃহস্পতিবার রায়ে ঢাকায় বনানীতে দুইজন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে ধর্ষণের আলোচিত মামলায় আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে সাফাত আহমেদসহ পাঁচ জন আসামীর সব ক’জনকে খালাস দিয়েছে আদালত।
২০১৭ সালের ২৮শে মার্চ বনানীর রেইনট্রি হোটেলে আয়োজিত জন্মদিনের পার্টিতে দুইজন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়ে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে অভিযোগ করা হয়।
ধর্ষণের অভিযোগে আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে সাফাত আহমেদ ও তার দুই বন্ধুসহ মোট পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন ওই দুই তরুণী।
ঘটনার প্রায় দেড় মাস পর পুলিশের কাছে গেলে পুলিশ শুরুতে মামলাটি নিতে চায়নি বলেও অভিযোগ করেছিল বাদীরা।২০১৭ সালের ৬ই মে পাঁচ জনের বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করা হয়।ওই বছর ৭ই জুন মামলায় অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। একই বছরের ১৩ই জুলাই আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে। দুই দফা তারিখ পিছিয়ে ১১ই নভেম্বরে রায় ঘোষণা করা হয়।